Śrī Śrīmad Bhaktivedānta Nārāyana Gosvāmī Mahāraja  •  100th Anniversary

Sripad B.V. Govinda Maharaja

India, Kolkata

জগদ্‌গুরু নিত্যলীলাপ্রবিষ্ট ওঁ বিষ্ণুপাদ অষ্টোত্তরশতশ্রী শ্রীশ্রীমদ্ভক্তিবেদান্ত নারায়ণ গোস্বামী মহারাজের আবির্ভাব-শতবার্ষিকীতে এ দাসাধমের শ্রদ্ধাঞ্জলি

বর্ত্তমান ২০২১ খৃষ্টাব্দে অস্মদীয় শিক্ষাগুরুপাদপদ্ম নিত্যলীলাপ্রবিষ্ট ওঁ বিষ্ণুপাদ অষ্টোত্তরশতশ্রী শ্রীমদ্ভক্তিবেদান্ত নারায়ণ গোস্বামী মহারাজের শুভাবির্ভাব-শতবার্ষিকী উদ্যাপিত হইতেছে। এতদুপলক্ষে তৎপ্রেষ্ঠ সেবকগণের মধ্যে বিবিধ প্রকারের সেবাচেষ্টা--সমগ্র বিশ্বের বিভিন্নস্থানে ধর্ম্মসভার মাধ্যমে তাঁহার অপ্রাকৃত গুণবৈশিষ্ট্য প্রচার, পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে তাঁহার অপ্রাকৃত চরিত্র-গুণাবলী বর্ণন, Audio/Video’এর মাধ্যমে তাঁহার প্রচারানুষ্ঠান, হরিকথাসমূহ, শ্রীধাম-পরিক্রমাদি জনসমক্ষে তুলিয়া ধরিবার এক অভূতপূর্ব্ব প্রয়াস লক্ষীভূত হইতেছে। উক্ত শতবার্ষিকী প্রচারাভিযানে আমার ন্যায় অযোগ্য সাধারণ সেবকের যোগদানের প্রয়াস ‘বাদরের চাঁদ ধরিবার’ ন্যায় নিতান্ত হাস্যাস্পদ। তথাপি তাঁহাদের আদেশে এবং “(গুরু) বৈষ্ণবের গুণগান, করিলে জীবের ত্রাণ, যা’তে হয় বাঞ্ছিত পূরণ।”-মহাজনের এই বাণী শিরোধার্য্য করিয়া স্বীয় আত্মকল্যাণার্থে কিছু প্রকাশ করিতে চেষ্টা করিতেছি।

নিত্যলীলাপ্রবিষ্ট ওঁ বিষ্ণুপাদ ১০৮শ্রী শ্রীমদ্ভক্তিপ্রজ্ঞান কেশব গোস্বামি মহারাজ-প্রতিষ্ঠিত শ্রীগৌড়ীয় বেদান্ত সমিতির স্তম্ভত্রয়ের মধ্যে একজন ছিলেন শ্রীমদ্ভক্তিবেদান্ত নারায়ণ গোস্বামী মহারাজে। বেদান্ত সমিতি সম্পর্কে আলোচনা করিতে গেলে মদীয় শ্রীগুরুপাদপদ্ম শ্রীমদ্ভক্তিবেদান্ত বামন গোস্বামী মহারাজ, শ্রীমদ্ভক্তিবেদান্ত নারায়ণ গোস্বামী মহারাজ ও শ্রীমদ্ভক্তিবেদান্ত ত্রিবিক্রম গোস্বামী মহারাজের প্রসঙ্গ অবশ্যই উল্লেখ করিতে হয়। কারণ এই ত্রয়ীর (ব্রাহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর) সুষ্ঠু পরিচালনায় ও তত্ত্বাবধানে শ্রীসমিতি পত্র, পুষ্প ও ফলে পল্লবিত হইয়াছিল। শ্রীল গুরুমহারাজ দীক্ষা প্রদান করিয়া ভগবানের সেবার পাত্র সংগ্রহ করিতেন, শ্রীল নারায়ণ গোস্বামী মহারাজ তাহাদিগকে যথোপযুক্ত শিক্ষা প্রদান করিয়া ভগবৎ-সেবোপযোগী করিয়া তুলিতেন এবং শ্রীল ত্রিবিক্রম মহারাজ তাঁহার কঠোর ও সুতীক্ষ্ণ বাণীর (উপদেশ) দ্বারা তাহাদিগের দূরতিক্রমণীয়া মায়ার বন্ধন ছেদনপূর্ব্বক হরিভজনের পথ সুগম করিয়া দিতেন।

শ্রীল মহারাজ বৈষ্ণবের তথা মহাভাগবতের সর্ব্বসদ্‌গুণে বিভূষিত ছিলেন। ভগবানের ন্যায় তিনিও পরদুঃখদুঃখী, সেবকবৎসল ও ভক্তবৎসল ছিলেন। ভগবদ্বিস্মৃতি হইল জীবের দুঃখের মূল কারণ। পরদুঃখদুঃখী শ্রীল মহারাজ বিশ্বের প্রায় সকল দেশে শ্রীচৈতন্যবাণী প্রচার করিয়া ত্রিতাপগ্রস্ত জীবসকলকে কৃষ্ণোন্মুখ করিতে উদ্বুদ্ধ ছিলেন। তাঁহার শ্রীমুখে বীর্য্যবতী হরিকথা শ্রবণ করিয়া বহু ব্যক্তি তাঁহার উচ্চ ভজনাদর্শে অনুপ্রাণিত হইয়া তাঁহার সান্নিধ্যে শ্রীহরিভজন করিতে প্রয়াসী হন।

তিনি এমনই এক ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন যে, তাঁহাকে দেখিলে সেবকগণ ভয়ে সন্ত্রস্ত হইয়া যাইতেন। এমনকি, তাঁহার সতীর্থ সন্ন্যাসী গুরুভ্রাতাগণও তাঁহার সম্মুখে কথা বলিতে কুণ্ঠাবোধ করিতেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি ছিলেন “বজ্রাদপি কঠোরাণি কোমলানি কুসুমাদপি”-বাক্যের মূর্ত্তবিগ্রহ। উপর হইতে তাঁহাকে খুব বজ্রের ন্যায় কঠোর মনে হইলেও তাঁহার অন্তর ছিল কুসুমাপেক্ষাও কোমল- শিশুর ন্যায় সরল। তাঁহার কোমল হৃদয়ে যে স্নেহামৃতের সমুদ্র বিরাজিত ছিল তাহা তাঁহার সান্নিধ্যে আগত ব্যক্তিমাত্রেই উপলব্ধি করিয়া অভিভূত হইতেন।

শ্রীল নরোত্তমদাস ঠাকুর বৈষ্ণবের মহিমা কীর্ত্তন করিতে গিয়া বলিয়াছেন,-“গঙ্গার পরশ হইলে পশ্চাতে পাবন। দর্শনে পবিত্র কর এই তোমার গুণ|” গঙ্গার স্পর্শ ব্যতীত জীব পবিত্র হইতে পারে না, কিন্তু বৈষ্ণবের (মহাভাগবতের) দর্শনমাত্রেই জীব পবিত্র হইয়া থাকেন। আবার “যাঁহার দর্শনে মুখে আইসে কৃষ্ণনাম। তাঁহারে জানিহ তুমি বৈষ্ণব-প্রধান॥” বলা হইয়াছে। শ্রীল মহারাজের দর্শনমাত্রেই বহু সৌভাগ্যবান্ ব্যক্তি মায়াবন্ধন ছেদন করত তাঁহাতে আকৃষ্ট হইয়া হরিভজনে নিযুক্ত হইয়াছেন। অতএব তিনি যে বৈষ্ণব-প্রধান ছিলেন তাহা আর বলিবার প্রয়োজন নাই এবং সে-বিষয়ে কোনরূপ সন্দেহের অবকাশ নাই।

সাধারণ নিয়মানুসারে শ্রীগুরুদেব তদাশ্রিত শিষ্যগণকে অধিক স্নেহ-প্রীতি করিয়া থাকেন এবং সকল কাজে তাহাদিগকে অগ্রাধিকার প্রদান করেন। কিন্তু শ্রীল মহারাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যাইত। তিনি স্বীয় শিষ্যাপেক্ষা তাঁহার সতীর্থ শ্রীমদ্ভক্তিবেদান্ত বামন গোস্বামী মহারাজের শ্রীচরণাশ্রিত সেবকগণকে সর্ব্বদাই প্রাধান্য দিতেন এবং তাহাদের উপর অধিক ভরসা করিতেন। একবার শ্রীল মহারাজের শ্রীচরণাশ্রিত কোন এক বিশেষ সেবককে বলিতে শুনিয়াছি যে,-“আমি মনে করিতাম আমরা যেহেতু শ্রীল নারায়ণ গোস্বামী মহারাজের শিষ্য সেহেতু তিনি আমাদিগকে অধিক স্নেহ-প্রীতি করেন। কিন্তু আজ শ্রীল গুরুদেবের কথায় আমার সেই বহুদিনের বদ্ধমূল ধারণা ভ্রম বলিয়া বুঝিতে পারিলাম।” শ্রীল গুরুদেবের কথায়-“তিনি তাঁহার শিষ্যগণকে পরিত্যাগ করিতে বিন্দুমাত্র চিন্তা করেন না, পরন্তু শ্রীল বামন গোস্বামী মহারাজের শিষ্যগণকে (বিশেষতঃ যাহারা নিষ্ঠাবান্‌ সেবক) তিনি কখনই পরিত্যাগ করিবেন না।” বাস্তবে এইরূপ ঘটনাও আমরা লক্ষ্য করিয়াছি। ইহাদ্বারা তিনি জ্যেষ্ঠ গুরুভ্রাতার প্রতি তাঁহার যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক, সম্বন্ধ এবং তিনি যে তাহাকে বিশেষ সম্মান প্রদর্শন ও মর্য্যাদা রক্ষা করেন, তাহা তিনি পরোক্ষভাবে স্বচরণাশ্রিত সেবকগণকে বুঝাইয়া দিলেন।

শ্রীল মহারাজ যদ্রূপ শ্রীহরি-গুরু-বৈষ্ণব-সেবায় সমর্পিতপ্রাণ ছিলেন ঠিক তদ্রূপ হরিকথারূপ উপদেশাদির মাধ্যমে সেবকগণকেও হরি-গুরু-বৈষ্ণবসেবায় উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করিতেন। সেবাকার্য্যে উৎসাহী সেবকগণকে তিনি সর্ব্বদা নজরে নজরে রাখিতেন এবং তাহাদের সেবাকার্য্যের জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি প্রদান করিয়া উৎসাহ বর্দ্ধিত করিয়া থাকিতেন। হরিভজনোৎসুক সকলকে তিনি হরিভজনের সুযোগ প্রদান করিতেন। কে কোন্‌ মঠ হইতে আসিয়াছে বা কাহার শিষ্য, তাহা দেখিবার প্রয়োজন বোধ করিতেন না। তিনি সমগ্র বিশ্বে অগণিত শিষ্য-প্রশিষ্য ও অনুরাগী ভক্তবৃন্দের একত্র নিবাসস্বরূপ। আপন-পর, শক্র-মিত্রের ভেদাভেদ ভুলিয়া সকলকে আপন করিয়া আশ্রয় প্রদান ও ব্রজরসধারা সিঞ্চিত করিয়া তাহাদিগকে স্বীয় অভীষ্টের পাদপদ্মে নিযুক্ত করাই ছিল তাহার মূল লক্ষ্য।

শ্রীনবদ্বীপধাম-পরিক্রমা ও শ্রীব্রজমণ্ডল-পরিক্রমা এবং নগর-সঙ্কীর্ত্তনাদি ছিল তাঁহার প্রাণস্বরূপ। প্রকট থাকাকালে প্রতি বৎসর তিনি পরিক্রমায় যোগদান তথা নেতৃত্ব প্রদান করিতেন। পরিক্রমাকালে তিনি দুবাহু প্রসারিত করিয়া নিজে উদ্দণ্ড নৃত্য করিতেন এবং সকলকে নৃত্য করিতে উৎসাহ প্রদান করিতেন। পরিক্রমায় যোগদানকারী যাত্রিগণকে যথাযথ থাকিবার ও প্রসাদাদির সুবন্দোবস্ত করিতে না পারিবার জন্য দুঃখ প্রকাশ করিতেন এবং আগামী বর্ষগুলিতে আরও অধিক পরিমাণে যাত্রী লইয়া আসিবার জন্য আবেদন করিতেন। তাঁহার সেই হৃদয়স্পর্শী ও নিঃস্বার্থ আবেদনে উপস্থিত যাত্রিগণ নিজদিগকে ধন্যাতিধন্য মনে করিতেন এবং সাংসারিক নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও প্রতি বৎসর পরিক্রমায় যোগদান করিতেন। শীব্রজমণ্ডল-পরিক্রমাকালীন দামোদর-ব্রতকালে ‘রমণী শিরোমণি বৃষভানুনন্দিনী’, ‘শ্রীনন্দনন্দনাষ্টকম্‌’, ‘শ্রীরাধাকৃপাকটাক্ষ-স্তোত্রম্‌’, ও ‘শ্রীদামোদরাষ্টকম্‌’ প্রভৃতি কীর্ত্তনগুলি তিনি স্বয়ং করিতেন ও উপস্থিত সকলকে করাইতেন। তখন যে কি অভূতপূর্ব্ব পরিবেশ সৃষ্টি হইত তাহা পরিক্রমায় যোগদানকারী ভক্তগণ মর্ম্মে মর্ম্মে উপলব্ধি করিতেন। ২০০৩ খৃষ্টাব্দে শ্রীগৌড়ীয় বেদান্ত সমিতিতে মতানৈক্য ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ২০০৪ খৃষ্টাব্দে তিনি শ্রীনবদ্বীপধাম-পরিক্রমায় যোগদান করিতে আসিয়াও পরিস্থিতির অবনতি দেখিয়া ক্রন্দন করিতে করিতে মথুরায় প্রত্যাবর্ত্তন করিতে বাধ্য হন। তাঁহার জীবদ্দশায় প্রথম নবদ্বীপধাম-পরিক্রমায় ছেদ পড়িয়াছিল ঐ বৎসরেই। কিন্তু তিনি মথুরায় প্রত্যাবর্ত্তন করিয়া তথাকার ভক্তবৃন্দকে লইয়া শ্রীধামনবদ্বীপ-পরিক্রমা-মানসে শ্রীব্রজমণ্ডল-পরিক্রমা করেন। তৎপরবর্ত্তী বৎসরে শ্রীধাম নবদ্বীপে পৃথক্‌ মঠ স্থাপনপূর্ব্বক জীবনের অন্তিমদিন পর্য্যন্ত সাড়ম্বরে যথারীতি পূর্ব্ববৎ শ্রীনবদ্বীপধাম-পরিক্রমা পরিচালনা করেন।

শ্রীল মহারাজ ছিলেন শ্রীমতী বার্ষভানবীর একান্ত প্রিয়জন। তিনি সর্ব্বদাই শ্রীমতী রাধারাণীর মহিমা তথা উন্নত-উজ্জ্বলরসের কথা প্রচার করিতেন। শ্রীনবদ্বীপধাম-পরিক্রমাকালে সমুদ্রগড়ে তিনি এবং শ্রীল ত্রিবিক্রম মহারাজ- উভয়ের মধ্যে শ্রীরাধাকৃষ্ণের লীলারস আস্বাদন করিবার এক অভিনব পন্থা আমরা লক্ষ্য করিয়াছি। শ্রীল মহারাজ সমুদ্রসেনের পক্ষ লইয়া শ্রীমতী রাধারাণীর তথা ব্রজগোপীগণের শ্রেষ্ঠতা প্রতিপাদন করিতেন এবং শ্রীল ত্রিবিক্রম মহারাজ ভীমসেনের পক্ষ লইয়া ‘শ্রীকৃষ্ণই যে মূল’ তাহা প্রমাণ করিবার চেষ্টা করিতেন। কিন্তু পরিশেষে শ্রীল মহারাজ শাস্ত্রীয় যুক্তি ও তত্ত্বসিদ্ধান্ত স্থাপনপূর্ব্বক শ্রীরাধারাণীই যে সর্ব্বশ্রেষ্ঠ তাহা প্রতিপন্ন করিতেন। শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুরের ভাষায়—

বৃষভানুসুতা, চরণ-সেবনে, হইব পাল্যদাসী৷
শ্রীরাধার সুখ, সতত সাধনে, রহিব আমি প্রয়াসী॥
শ্রীরাধার সুখে, কৃষ্ণের যে সুখ, জানিব মনেতে আমি৷
রাধাপদ ছাড়ি’, শ্রীকৃষ্ণ সঙ্গমে, কভু না হইব কামী॥
সখীগণ মম, পরম সুহৃৎ, যুগল-প্রেমের গুরু৷
তদনুগা হ’য়ে, সেবিব রাধার, চরণ-কল্পতরু॥
রাধাপক্ষ ছাড়ি’, যে-জন সে-জন, যেভাবে সেভাবে থাকে।
আমি ত’ রাধিকা-, পক্ষপাতী সদা, কভু নাহি হেরি তাঁ’কে॥
–—শ্রীল মহারাজ ছিলেন এই বাণীর মূর্ত্তপ্রতীক

শ্রীল মহারাজ পাশ্চাত্ত্যদেশে শ্রীমন্মহাপ্রভুর বাণী প্রচার ও ব্রজগোপী তথা ব্রজবাসিগণের মহিমা প্রচার এবং ব্রজমণ্ডলান্তর্গত বিভিন্ন ভগ্নপ্রায় শ্রীমন্দির তথা শ্রীকৃষ্ণলীলার স্মৃতিসমূহ রক্ষায় নিজেকে উৎসর্গ করিয়াছিলেন। তাঁহার এই প্রচারাভিযানে ও ব্রজমণ্ডলের প্রাচীন স্মৃতিরক্ষায় সন্তষ্ট হইয়া তাঁহাকে ‘প্রকৃত ব্রজবাসী’ নির্দ্ধারণপূর্ব্বক উঁচাগাঁওস্থিত বিদ্বন্মণ্ডলী তাঁহাকে যুগাচার্য্য উপাধিতে ভূষিত করিয়াছিলেন।

পূর্ব্বাচার্য্যগণের পদাঙ্কানুসরণ করত এবং স্বীয় শ্রীগুরুপাদপদ্মের আদেশে তিনি বহু বাংলা গ্রন্থের বিশেষতঃ গোস্বামি-গ্রন্থের সহজ-সরল হিন্দীভাষায় অনুবাদপূর্ব্বক প্রকাশ করিয়াছিলেন। সংস্কৃতানভিজ্ঞগণের যাহাতে সহজে শাস্ত্রীয় সিদ্ধান্ত বোধগম্য হয় তজ্জন্য তিনি দিবারাত্র পরিশ্রম স্বীকার করিয়া শ্রীগুরুবর্গের বাণী ও ভগবানের মহিমা-মাহাত্ম্য প্রচার করিয়াছেন। হিন্দী ভাষায় মাসিক ‘শ্রীভাগবত-পত্রিকা’ প্রকাশ করিয়া তিনি হিন্দীভাষাভাষিগণের মধ্যে শ্রীমন্মহাপ্রভুর সম্পর্কে, শুদ্ধ ভাগবতধর্ম্ম তথা গৌড়ীয়-বৈষ্ণব-সম্প্রদায়ের শুদ্ধ বিচারধারা প্রচার ও প্রসার করিয়াছিলেন।

পরিশেষে শ্রীল মহারাজের অভয় চরণকমলে আমার অহৈতুকী প্রার্থনা- তিনি আমাকে অমায়ায় কৃপা করুন যেন তাঁহার আদর্শিত-প্রদর্শিত ও নির্দ্দেশিত পথানুসরণ করত সমগ্র জীবনটাই শ্রীহরি-গুরু-বৈষ্ণবসেবাদ্বারা তদভীষ্টদেবের সেবায় আত্মনিয়োগ করিতে পারি।

জয় শ্রীল নারায়ণ গোস্বামী মহারাজ কি জয়।

- শ্রীভক্তিবেদান্ত গোবিন্দ মহারাজ